রবিবার দুপুরে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাট এলাকার একটি মৎস্যঘেরের টয়লেটের রিংস্লাপের মধ্যে থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশু আব্দুল্লাহ জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেরার বিশারীঘাট এলাকার দলিল লেখক সিরাজুল ইসলাম সোহাগ হাওলাদারের ছেলে।
শনিবার ঢাকার কল্যাণপুর থেকে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা হৃদয় ওরফে রাহাত চাপরাশীকে (২২) আটক করা হয়। তিনি চাপরাশী বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন চাপরাশীর ছেলে।
মোড়েলগঞ্জ থানার ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম জানান, প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢাকার কল্যাণপুর থেকে হৃদয়কে আটক করা হয়েছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় স্বীকার করে যে, মুক্তিপণের দাবিতে শিশুটিকে তারা অপহরণ করে। দফায় দফায় মোবাইল ফোন করে শিশুর বাবার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। শিশুটি কান্না শুরু করলে গলাটিপে তাকে হত্যার পর রাস্তার পাশে মৎস্যঘেরের টয়লেটের রিংস্লাপের মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায়।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় জানান, ময়নতদন্তের জন্য শিশুটির লাশ বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক হৃদয়কে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হবে বলে পুলিশ সুপার জানান।
এর আগে বুধবার পুলিশ হৃদয়ের মা নাছিমা বেগ (৫২) বোন আবির আক্তার (১৪), মহিউদ্দিন চাপরাশী (৩৫), ফায়জুল চাপরাশী (২৫), দেলোয়ার হোসেন (৩০) এবং রুবেল নামে ছয়জনকে আটক করে। পুলিশ হৃদয়ের বাড়ি থেকে মোবাইল ফোন, একটি মোটরসাইকেল, গ্রিলকাটার যন্ত্রপাতি, গ্যাসকাটার মেশিন এবং গ্যাসপাইপ উদ্ধার করে।
নিহত শিশুর বাবা সিরাজুল ইসলাম সোহাগ জানান, ভাবতে অবাক লাগে এই ভাবে মায়ের কোল থেকে আড়াই মাসের শিশুকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ এবং পরবর্তীতে তারা শিশুটিকে হত্যা করেছে। এভাবে কোন মা-বাবা যেন সন্তানহারা না হয়। দেশের মাটিতে আর যেন কেউ এ ধরনের অপরাধ করতে সাহস না পায়। হত্যাকারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত গত সোমবার ভোরে ( ১১ মার্চ) বিশারীঘাট এলাকায় বাড়ির জানালার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে মায়ের কোলে ঘুমিয়ে থাকা আড়াই মাসের অসুস্থ শিশু আব্দুল্লাহকে অপহরণ করা হয়। এসময় অপহরণকারীরা তার বাবার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যায়। পরে ওই মোবাইল দিয়ে ফোন করে শিশুর মুক্তিপণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। এ ঘটনায় শিশুর বাবা সিরাজুল ইসলাম সোহাগ বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিদের আসামি করে অপহরণ এবং মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে হৃদয়ের মা-বোনসহ ছয়নকে আটক করে। এর পর ঢাকার কল্যাণপুর থেকে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা হৃদয়কে আটক করে। পরে তার দেখানো মতে শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।